নিষ্পাপ একজোড়া চোখের জলে অসংখ্য প্রশ্ন, অজস্র হতাশা।
নীরবে দাঁড়িয়ে হাসছে পৃথিবী
এ এক হতভাগ্য স্বামীর আর্তনাদ, এ এক আশাহীন বাবার চিৎকার,এ এক পরিবার প্রধানের দুশ্চিন্তা-অথচ আপনি অথবা আপনাদের কাছে বড় অপ্রয়োজনীয় মানুষ।ভ্যান চালিয়েই সে পাঁচ জন মানুষের পেটের খোরাক পূরন করে যৎসামান্য ভাবে।অথচ এই লকডাউনের জন্য সে উপায় ও বন্ধ। তারপরও পরিবারের প্রয়োজনে ভাঙা সিটের ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু আমাদের দেশ লকডাউনের দিক থেকে খুব কড়া।মোটরবাইকে করোনা নেই,ভিআইপিদের গাড়িতে করোনা নেই,ক্ষমতাবানদের গাড়িতে করোনা নেই-করোনা আছে শুধু গরীব ভ্যান আর রিকশাচালকদের।কেনই বা থাকবে না! তারা তো নেহায়েত পেটের দায়ে রাস্তায় নেমেছে।তাদের গাড়ি পাংচার করে দিতে হবে,চাবি খুলে আটকে রাখতে হবে দিনের পর দিন।কারন উন্নয়নশীল এই দেশে গরীবের বেঁচে থাকার অধিকার নেই।গরীব মরে যাক না খেয়ে,ওরা মরে যাক না খেতে দিতে পারা মলিন সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে, ঝুলে পড়ুক ফ্যান অথবা গাছে দড়ি দিয়ে।ওরা মরে যাক যারা ভেবেছিল তাদের ছেলেমেয়ে বড় হয়ে তাদের তিনবেলা খাওয়ানো নিশ্চিত করবে। ওরা মরে যাক অসুস্হতা নিয়ে,ক্ষুধা নিয়ে,ক্লান্তি আর অবসাদ নিয়ে,চোখে রাজ্যের ঘুম নিয়ে।ওরা মরে যাক ওদের কষ্ট থেকে নির্গত হওয়া অভিশাপ বাস্তবরুপ নেয় নি বলে।ওরা মরে যাক চোখে এক ক্ষুধাহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে।
আমি এক ক্ষুদ্র মানুষ।তবু কয়েকজন ব্যক্তি আমার লিস্টে আছেন যারা প্রশাসনে উর্ধ্বতন অথবা অধঃস্থন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত।আমি অনুরোধ করব আপনাদের কাছে -একটু সদয় হোন গরীবের প্রতি,অসহায় বৃদ্ধের প্রতি,প্রয়োজনে হাসপাতালে ছুটে যাওয়া পরিবারের প্রতি। এত মানুষের অভিশাপ নিয়ে কখনো কারুর সুস্হতা আসতে পারে না।
পৃথিবীর সুস্হতা নিশ্চিত হবে একদিন, কিন্তু মানবতার সুস্হতা আসবে কি কখনো!মানবিক হয়ে উঠুন প্রিয় প্রশাসন। দেশ আপনার কাছে নিরাপত্তা চায়,প্রহরা চায়। আপনার কাছে ভয় চায় না।
0 Comments